কিয়ামত বা মহাপ্রলয়ের পর ৪০বছর পর্যন্ত কোন মানব-দানব, জ্বীন-পরী, ফেরেশতা, পশু-পক্ষী প্রভৃতি কোন প্রাণীই জীবিত থাকিবে না। তারপর আল্লাহপাকের আদেশে হযরত জিব্রাইল, মিকাইল, ইসরাফিল, আজরাইল (আঃ) এবং আল্লাহর আরশবাহী ৮জন ফেরেশতা ও বেহেশতের রক্ষক রেজওয়ান ও দোযখের দারগা মালেক ফেরেশতা জীবিত হইবেন। তারপর আল্লাহ পাকের আদেশে ইসরাফিল (আঃ) পুনরায় তাঁহার শিঙ্গায় ফুঁৎকার দিলে হযরত আদম (আঃ) হইতে আরম্ভ করিয়া মহাপ্রলয় পর্যন্ত যত মানুষ পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করিয়াছে ও মৃত্যুমুখে পতিত হইয়াছে, সকলেই কবর হইতে উত্থিত হইবে। এ সমদ্ধে আল্লাহ পাক তাঁহার কালাম কুরআন মজিদে ঘোষনা করিয়াছেনঃ
وُنُفِخَ فِىْ الصُّوْرِ فَاِذَاهُمْ مِنَ الْاَجْدَاثِ اِلَي رَبِّهِمْ يَنْسِلُوْنَ قَا لُوْا يَوْيَلُوْنَ مِنْ بَعَثْنَا مِنْ مَرْقَدِنَا هَذَا مَاوْعَدَا الرَّحْمَنُ وَصَدَقَ الْمُرْسَلُوْنَ
উচ্চারণঃ ওয়া নুফিখা ফিচ্ছুরি ফাইযা হুম মিনাল আজদাছি ইলা রাব্বিহিম ইয়ানসিলুনা ক্বালু ইয়াও ইয়ালোনা মিন বা’ছনা মিন মারক্বাদ্বিনা হা-যা মাওয়াদার রাহমানু ওয়া ছাদাক্বাল মুরছালুন ।
অনুবাদঃ অর্থাৎ যে সময় ইসরাফিল (আঃ) পনুরায় শিঙ্গায় ফুঁক দিবেন, তখন সকলে আপন আপন সমপাধি হইতে উত্থিত হইয়া তাহাদের প্রভুর দিকে (আল্লাহর নিকট) ধাবিত হইবে। তাহারা বলিবে হায়! কে আদিগকে মাহানিদ্রার স্থান হইতে জাগরিত করিল? ফেরেশতাগণ বলিবেন, ইহাই সেই কিয়ামত যাহা করুণাময় আল্লাহপাক অঙ্গীকার করিয়াছেন এবং নবী রাসূরগণ বলিয়াছেন।
কিয়ামতের দিন জ্বীন-ইনছান, পশু-পক্ষী, কীট_পতঙ্গ সবাই পুনর্জীবিত হইয়া হাসরের মাঠে একত্রিত হইবে । তারপর আল্লাহ পাক নিজে বিচারক হইয়া পাপ পুণ্যের বিচার করে পুণ্যবানদিগকে বেহেশতে এবং পাপীদিগকে দোজখে প্রেরণ করিবেন ।
যখন বেহেশ্তী ও দোজখীদের নিজ নিজ স্থানে উপস্থিত করা হইবে তখন জান্নাতী ও দোজখীদিগকে মাঝামাঝি স্থানে দুম্বার আকৃতি বিশেষ আনয়ন করিয়া তাহাকে জবেহ করা হইবে এবং বেহেশতী ও দোজখীদিগকে সম্বোধন করিয়া বলা হইবে যে, অদ্য হইতে তোমার আর কখনও মৃত্যু হইবে না। অতঃপর বেহেশতীগন অনন্তকাল পরম সুখে কাল যাপন করিতে থাকিবে। আর দোজখীগণ চিরকালের জন্য দোযখের কঠোর যন্ত্রণা ভোগকরিতে থকিবে। দজোখবাসীদের সম্বন্ধে আল্লাহপাক বলিয়াছেন –
لاَ يَمُوْتُ فِيْهَا وَلاَيَحْىَ
–সেখানে তাহারা মরিবেও না।