হজ্বের কাফফারা

হজ্জে ত্রুটি-বিচ্যুতি তথা কোন অপরাধ হয়ে গেলে এর কাফফারা স্বরূপ তিনটা জিনিস অবস্থাভেদে ওয়াজিব হয়- ১। দম ২। সদক্বাহ ও ৩। রোযা। এ সম্পর্কে নিম্নে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলঃ
ভূলত্রুটি ও অপরাধ কোন ওযর ছাড়াও সংঘটিত হতে পারে আবার ওযরের কারণেও প্রকাশ পেতে পারে। ওযরবিহীন সংঘটিত ভুল যদি পরিপূর্নভাবে সম্পাদিত হয় তাহলে কাফফারা হিসাবে নিশ্চিতভাবে ‘দম’ দিতে হবে। আর বিনা ওযরে সংঘটিত হলে এবং কাজটি অসম্পূর্ণ করা হলে নিশ্চিতরূপে সদক্বাহ ওয়াজিব হয়। ওযরের কারণে সংঘটিত অপরাধ যদি পূর্ণরূপে সম্পাদিত হয়, তাহলে দম, সাদক্বাহ এবং রোযা এই তিনটা থেকে কোন একটা দ্বারা কাফফারা দেয়া যায়। উপরে উল্লেখিত হেরম এলাকার ত্রুটি-বিচ্যুতির জন্য এবং স্থলভাগের পশু শিকারের বেলায় সম্ভব হলে তদনুযায়ী পশু যবেহ করা বা সমপরিমাণ মূল্য সাদক্বাহ কিংবা একটি রোযা আদায় করা যায়। ইহরামের ত্রুটি বিচ্যুতির বেলায় ‘ক্বারিন’ (ক্বিরান আদায়কারী) যদি ওমরাহ পালন করার পূর্বে ত্রুটি প্রকাশ পায়, তাকে দ্বিগুণ কাফফারা আদায় করতে হবে যেহেতু তার ওমরা ও হজ্ব দুটোরই ইহরাম রয়েছে। আর ইফরাদকারীকে ইহরামের পরে সংঘটিত ত্রুটির জন্য একটা কাফফারা দিতে হবে।
উল্লেখ্য যে ইহরামের নিষিদ্ধ কাজগুলো ওযরের কারণে প্রকাশ পেলেও কাফফারা ওয়াজিব হয়। ওযরের কারণে হজ্জের কোন ওয়াজিব বাদ পড়ে গেলে কাফফারা দিতে হয় না।
হজ্জের কাফফারায় সাদক্বাহ বলতে সাধারণতঃ এক ফিতরা পরিমাণ অর্থাৎ অর্ধ সা ২ কেজি ৫০ গ্রাম গম বা খাদ্য দ্রব্য বুঝায়। সময়ভেদে পূর্ণ এক সা অর্থাৎ সাড়ে ৪  কেজি ১০০ গ্রাম সাদক্বাহ দিতে হয়। ‘দম’ বলতে বিশেষ করে হজ্বের ত্রুটি-বিচ্যুতির জন্য পশু যবেহকে বুঝায়। ক্বোরবানীর মত এখানে মেষ-ছাগল ইত্যাদি একটি কিংবা গরু-উট ইত্যদির এক সপ্তমাংশ যথেষ্ট; কিন্তু হায়য-নিফাস অবস্থায় তাওয়াফে যিয়ারত করলে অথবা আরাফাতে অবস্থানের পর এবং মাথা মুন্ডানোর পূর্বে স্ত্রী সহবাস করলে পূর্ণ উট বা পূর্ণ গাভী ‘দম’ হিসেবে যবেহ করতে হয়।

Comments

No comments yet. Why don’t you start the discussion?

Leave a Reply