হজ্জ ইসলামের অন্যতম বুনিয়াদী ইবাদত। আল্লাহ-প্রেমের পরম নিদর্শন এবং এক ব্যতিক্রমর্ধমী ইবাদত এ হজ্জ। ইসলামের সকল ইবাদত নামায, রোয, যাকাত, জিহাদ, সদক্বাহ-খয়রাত, যিকর-আযকার এবং তরীক্বতের সবক্ব পালন ইত্যাদি সর্বত্র আদায়যোগ্য। কিন্তু হজ্জ ব্যতিক্রম। এটা একমাত্র নির্দিষ্ট মওসুমে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের মেহমানরূপে মর্যাদাবান হয়ে খানায়ে কা’বা বায়তুল্লাহ শরীফ উপস্থিত হয়েই শ্তধু আদায় করা যায়।
কোন কোন ইবাদত দৈহিক; যেমন নামায, রোযা, যিকর- আযকার’ আর কোন কোন ইবাদত মালী বা আর্থিক; যেমন যাকাত-ফিতরা, সাদক্বাহ-খায়রাত ইত্যাদি। কিন্তু হজ্জ এমন একটি ইবাদত যা শারীরিক শ্রম-সাধনা এবং আর্থিক ক্বোরবানী উভয়ের সমন্বয়ে আদায় করতে হয়। অন্যান্য সকল ইবাদত রিয়াযতে আনুগত্যের প্রাধান্যই পরিদৃষ্ট হয় আর হজ্জে বায়তুল্লাহর বিধি-বিধান পালনকালে আল্লাহর প্রেমের প্রধান্যই পরিলক্ষিত হয়। তাই হজ্জে মাক্ববূলের প্রতিদান হলো জান্নাত।
হজ্জ এমন একটি আমল যার বদৌলতে আন্তর্জাতিক ইসলামী ভ্রাতৃত্ব বন্ধুত্ব এবং সংহতিও সূচিত হয় বিশ্ব মুসলিমের মধ্যে। কেননা, প্রতি বছর নির্দিষ্ট তারিখে নির্দিষ্ট সময়ে লক্ষ-লক্ষ মু’মিন নর-নারী আরাফাত, মিনা-মুয্দালিফায় সমবেত হয়ে এক আল্লাহর মহত্ব-বড়ত্ব ও গুণগানে মত্ত হয়ে উঠে। ভাষা, বর্ণ, বাসভূমি ইত্যাদি কারণে বিক্ষিপ্ত মুসলিম মিল্লাত হজ্জের বরকতে ও বদৌলতে আরাফাতের ময়দানে একক মুসলিম জাতি সত্তায় পরিণত হয়। এভাবেই বিশ্ব মুসলিম ঐক্যের ভিত সুদৃঢ় ও সুসংহত হয়। হজ্জ এমন একটি গুরুত্ববহ রিয়াযত যার বরকতে মানব হৃদয়ে বিনয় নম্রতা ও কোমলতা আর চরিত্রে পবিত্রতা পরিশুদ্ধি অর্জিত হয়। যা হজ্জে মাকবূলেরই নমুনা ও নিদর্শন। এহেন অপরিসীম পার্থিব ও পারলৌকিক কল্যাণ, মঙ্গল ও উপকার নিহিত রয়েছে পবিত্র হজ্জে বায়তুল্লাহর মধ্যে। এজন্য ক্বোরআনে কারীমের অনেক আয়াতে এবং হাদীসে নবভী শরীফের অনেক রেওয়ায়ত বারংবার তাগিদ দেয়া হয়েছে সামর্থ্যবান মু’মিন নর-নারীর প্রতি হজ্জ সম্পন্ন করার বিষয়ে। -সুত্রঃ গাউসিয়া তারবিয়াতী নেসাব-
Posted inহজ্ব / ওমরাহ